বাদশাহর মেয়ে জুলেখার গল্প (হার্ডকভার)

বাদশাহর মেয়ে জুলেখার গল্প' নামক গল্পের বইটি মোট ছয়টি গল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে, তন্মধ্যে- 'বাদশাহর মেয়ে জুলেখার গল্প' নামক রূপক গল্পটি বস্তিবাসী এক কিশোরী মেয়ের স্বপ্নভঙ্গের কাহিনি ঘিরে রচিত। বস্তির মেয়ে জুলেখা, ঢাকার বিজয় সরণিতে ফুল বিক্রি করে আর বস্তির স্কুলে লেখাপড়া করে। তার একমাত্র স্বপ্ন, লেখাপড়া করে বস্তির স্কুলের রেহানা মিসের মতো সেও একদিন বিএ পাস করবে কিন্তু বস্তিবাসী জুলেখাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়, কখনো তা বাস্তবে রূপ লাভ করে না। 'অপয়া চরিতকথা' গল্পটি শহরের চটপটে, দুরন্তপনা স্বভাবের একটি শিক্ষিত মেয়েকে কেন্দ্র করে লেখা কাহিনি। মেয়েটি দুই বছরের মাথায় দুটি বিয়ে করে কিন্তু দুটি বিয়ের ক্ষেত্রেই বর কাকতালীয়ভাবে বিয়ের সাত দিনের মাথায় মারা যায়- প্রথম ক্ষেত্রে করোনায় আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে। ফলশ্রুতিতে তার কপালে জুটে অপয়ার অপবাদ। 'আষাঢ়ে গল্প' শীর্ষক কাহিনিটির মূল চরিত্র সাব্বির। সে ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী আনন্দ মোহন কলেজে পড়ে। একই কলেজের সিনিয়র পরেশদার সাথে কলেজের আরও কয়েকজন ছাত্র একটি মেস করে থাকে। প্রতি সন্ধ্যায় পরেশদার নেতৃত্বে তারা নানা আড্ডায় মেতে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় আষাঢ়ের কোনো এক বাদল রাতে তারা এক গল্পের আসর বসায়। গল্পের আসর দিয়ে যে রাতের শুরু, সে রাত শেষ হয় খুনের মতো নৃশংস ঘটনার মধ্য দিয়ে। বইটির অন্য তিনটি গল্প- 'এক অটো রিকশাচালকের দাম্পত্য কাহিনি', 'শূন্য রেখা' এবং 'যখন স্বপ্ন পুড়ে যায়' শীর্ষক গল্পগুলোর কাহিনিও সাজানো হয়েছে আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহের আদলে। লেখকের লেখা গল্পগুলোর চরিত্রসমূহ আমাদের চোখের সামনেই সব সময় ঘুরে বেড়ায় এবং গল্পের কাহিনও আমাদের অজানা নয়। তবে গল্পগুলোর পাত্র-পাত্রীকে পাঠকের সামনে উপস্থাপনের কৌশল এবং গল্পের কাহিনি বলার ঢং লেখকের নিজস্ব স্বকীয়তায় উপজীব্য হয়ে ফুটে ওঠে। বইটি পাঠক মহলে সমাদৃত হবে, আশা করা যায়।